banner

SLIDE BAR

Image Slider By nurmonyitworld.net.ms NUR-MONY IT WORLD ENG.KAMRUL HASAN IFAZ. ''প্রযুক্তিকে ভালবাসুন।প্রযুক্তির সাথে থাকুন সবসময়, প্রযুক্তির আলো ছড়িয়ে দিন বিশ্বময়”

হেডলাইন

WELCOME TO OUR BLOG SITE.IF U LIKE OUR BLOG PLEASE SHEAR UR FRIENDS.Email us to inform about our wrong information. to inform about product price and specification, to inform about new product in the market, to inform that what you want to know?THANKS VISIT OUR BLOGSITE

১৪ জানুয়ারী, ২০১৩

ডোরেমন আসক্তি ও শিশুদের চোখের সমস্যা


doremonকার্টুন ছবি ডোরেমন দেখা নিয়ে বিস্তর লেখা হচ্ছে সংবাদপত্রে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরাও এ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে আসা শিশু রোগী পাচ্ছেন।জনস্বাস্থ্যের পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ নিয়ে স্বাস্থ্যকুশলের এবারের মূল রচনা
চার বছর বয়সী ছোট্ট শিশুকে নিয়ে এসেছেন তার মা-বাবা। তাঁদের দুশ্চিন্তা শিশুটি কয়েক দিন যাবৎ চোখ মিটমিট করছে। কেমন জানি অদ্ভুত আচরণ তার। আমার কক্ষে প্রবেশের পর শিশুটিকে তার আপনমনে বিচরণ করতে দেখি। মা-বাবার কাছ থেকে উপসর্গ শোনে মনে হলো শিশুটি কাউকে অনুসরণ করছে।
আমি শিশুর মাকে প্রশ্ন করি, ‘ও টেলিভিশন দেখে কি না?

‘খু-উব।’
শিশুটি এবার আমাদের আলোচনায় মনোযোগ দেয়। তাকিয়ে থাকে আমার মুখের দিকে। আমি মা-বাবার কাছ থেকে জানতে চাই, ‘ও নিশ্চয়ই কার্টুন দেখে!’
‘সারাক্ষণ! কার্টুনের পোকা বলতে পারেন।’
‘নিশ্চয়ই ডোরেমন দেখে?’
‘ডোরেমন তার প্রিয় কার্টুন!’
আমি শিশুটিকে তার নাম ধরে ডাকি। সে বলে, তাকে ডোরেমন ডাকলে কথা বলবে, নতুবা নয়।
প্রতিদিন এ রকম শিশু রোগীর সাক্ষাৎ পাচ্ছি আমি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আগত শিশুদের মাথাব্যথার উপসর্গের সঙ্গে কিছু আচরণগত সমস্যা নিয়ে মা-বাবা চিকিৎসার্থে আসছেন।
আমি চোখের ডাক্তার। মাথাব্যথার উপসর্গ নিয়ে মা-বাবা ও চিকিৎসকদের সাধারণ ধারণা, সম্ভবত দৃষ্টিশক্তির সমস্যার কারণে তা ঘটছে। সে কারণে শিশুবিশেষজ্ঞরা চক্ষুবিশেষজ্ঞদের কাছে রোগী পাঠিয়ে থাকেন।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে মা-বাবা নিজেদের সিদ্ধান্তেই চোখের চিকিৎসকের কাছে আসেন।
শিশুর মাথাব্যথায় মা-বাবা আরেকটি বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন, তা হলো তাঁদের সন্তানের মাথায় খারাপ কোনো রোগ হয়েছে কি না। মাথাব্যথার পরিচিত ওষুধ প্যারাসিটামল সেবনে উপসর্গের উপশম না হওয়ায় মা-বাবার এ ক্ষেত্রে সন্দেহ গাঢ় হয়। ‘প্রিয় সন্তানের ব্রেন টিউমার হয়নি তো?’ বা ‘ব্লাড ক্যানসার?’ ‘চোখের খারাপ কোনো অসুখের জন্য?’ এ ধরনের দুশ্চিন্তা নিরসনের ক্ষেত্রে চক্ষুবিশেষজ্ঞরা দুটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে থাকেন:
 দৃষ্টিশক্তি বা পাওয়ারের সমস্যা;
 দৃষ্টি স্নায়ুর সমস্যা।
চোখের দৃষ্টিশক্তির সমস্যা থেকে মাথাব্যথা হয়ে থাকে। স্কুলগামী শিশুদের পড়াশোনার শুরুতে পাওয়ারের সমস্যা চোখের ওপর বাড়তি চাপের সৃষ্টি করে। যেসব বাচ্চা টেলিভিশন বা কম্পিউটার দেখে, তাদের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। মস্তিষ্কের সঙ্গে চোখের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে বিধায় সেই চাপ মস্তিষ্কে প্রতিফলিত হয়। মাথাব্যথা, অবসাদগ্রস্ততা ইত্যাদি উপসর্গে আক্রান্ত হয় শিশু।
দৃষ্টিস্নায়ুর ক্ষেত্রে সমস্যা হয় মস্তিষ্কের উচ্চচাপের কারণে। আমাদের মস্তিষ্ক করোটির ভেতর আবদ্ধ থাকে বিধায় কোনো টিউমার বা টিউমারের মতো সৃষ্ট ব্যাধি মস্তিষ্কের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। এ চাপের দরুন দৃষ্টিস্নায়ু আক্রান্ত হয়, যা চোখের অভ্যন্তর ভাগে অবলোকন করা যায়।
আমরা শিশুর মাথাব্যথার উপসর্গে এসব বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে যাবতীয় পরীক্ষা সম্পন্ন করে থাকি।
ইদানীং শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, টেলিভিশন বা কম্পিউটার বা মুঠোফোন তাদের কাছে আকর্ষণীয় সামগ্রী। এসবের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণহীন পর্যায়ে চলে এসেছে। মা-বাবা, বিশেষ করে চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে তা যেন অনিবার্য বাস্তবতা। এসব যন্ত্র দর্শন বা ব্যবহারের কারণে শিশুরা নানা ধরনের দৃষ্টিজাত উপসর্গের শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে, টেলিভিশনে প্রচারিত কার্টুন দেখার ক্ষেত্রে শিশুদের অতিরিক্ত ঝোঁক থাকায় এসব উপসর্গ নিয়ে উদ্বিগ্ন বাবা চক্ষুবিশেষজ্ঞদের শরণাপন্ন হচ্ছেন।
অতি সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে, অধিকাংশ শিশু ডোরেমন নামের কার্টুনের মাত্রাতিরিক্ত ভক্তে পরিণত হয়েছে। ডোরেমন ভারতীয় একটি চ্যানেলে প্রচারিত হিন্দিতে ডাবিং করা জাপানি কার্টুন। এই কার্টুনের বিভিন্ন চরিত্র শিশুদের খুবই প্রিয়। এই কার্টুন মোটামুটি দিনব্যাপী প্রচারিত হওয়ায় শিশুরা টেলিভিশনের ‘পোকা দর্শক’-এ রূপান্তরিত হচ্ছে। কার্টুনের বিভিন্ন চরিত্রের পোশাক-আশাক, প্রকাশভঙ্গি ইত্যাদি অনুকরণ করছে শিশুরা। অনেক শিশু বাসায় হিন্দিতে কথা বলে, খাওয়াদাওয়া অঙ্গভঙ্গিতে বিচিত্র আচরণ করে। বলা যায়, সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে ‘ডোরেমন ক্রেজ’। আর শিশুদের জন্য এটা এক ধরনের আসক্তি।
আমরা আমাদের শিশুদের জন্য উন্মুক্ত খেলার মাঠ, খেলাধুলা, আনন্দ প্রকাশের পরিবেশ দিতে পারছি না, তাই শিশুরা ঘরে আটকে থাকছে। একধরনের জেলখানার পরিবেশ যেন; ঘরের ভেতরই তাদের জগৎ, তাদের বিচরণ। খেলার মাঠ, বন্ধুবান্ধবের বিকল্প টিভি গেম, কার্টুন। এসবে আসক্ত হয়ে পড়ায় বিভিন্ন ধরনের জটিলতার শিকার হচ্ছে তারা। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে নানাবিধ উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, যা শিশুর সৃজনশীল বিকাশের অন্তরায়।
প্রথম প্রশ্ন হলো, এমন পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় কী? এর উত্তরে বলা যায়, মা-বাবাকে বাস্তবতার নিরিখে মূল ভূমিকা পালন করতে হবে। শিশুদের দিকে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে। তাদের উল্লিখিত সামগ্রী ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্কুলের শিক্ষকেরাও বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন। মৃণ্ময় মনের অধিকারী শিশুদের গড়ার কারিগর তাঁরা। টেলিভিশনে প্রচারিত ভালো-মন্দের বিষয় সম্পর্কে ধারণা দিয়ে তাঁরা প্রভাবিত করতে পারেন। একই সঙ্গে বলা যায়, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত যাঁরা, বিশেষ করে নীতিনির্ধারণী মহল, মিডিয়ায় প্রচারিত অনুষ্ঠানাদির ভালো-মন্দ দিকের প্রতি লক্ষ রেখে ব্যবস্থা নিতে পারেন।
আমরা আমাদের শিশুদের মঙ্গলার্থে এ দিকটার প্রতি যেন মনোযোগী হই।
মো. শফিকুল ইসলাম
অধ্যাপক, চক্ষুবিজ্ঞান বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১২

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

“প্রযুক্তিকে ভালবাসুন, প্রযুক্তির সাথে থাকুন সবসময়, প্রযুক্তির আলো ছড়িয়ে দিন বিশ্বময়”

join fb

Join Me On Facebook
^ Back to Top