banner

SLIDE BAR

Image Slider By nurmonyitworld.net.ms NUR-MONY IT WORLD ENG.KAMRUL HASAN IFAZ. ''প্রযুক্তিকে ভালবাসুন।প্রযুক্তির সাথে থাকুন সবসময়, প্রযুক্তির আলো ছড়িয়ে দিন বিশ্বময়”

হেডলাইন

WELCOME TO OUR BLOG SITE.IF U LIKE OUR BLOG PLEASE SHEAR UR FRIENDS.Email us to inform about our wrong information. to inform about product price and specification, to inform about new product in the market, to inform that what you want to know?THANKS VISIT OUR BLOGSITE

১৪ জানুয়ারি, ২০১৩

যে শিশুর অটিজম আছে


autismশিশুর ব্যাপক বিকাশের সমস্যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অটিজম। অটিজম আছে এমন শিশু অন্যের সঙ্গে সঠিকভাবে সামাজিক সম্পর্ক রক্ষা করতে পারে না। তার আচরণের মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। সাধারণত শিশুর বয়স তিন বছর হওয়ার আগেই অটিজমের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়। ছেলেশিশুদের মধ্যে অটিজম হওয়ার হার মেয়েশিশুদের চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি। অটিজমের সাধারণ লক্ষণগুলো হচ্ছে শিশুর ভাষা শিখতে সমস্যা, অপরের চোখে চোখ না রাখা, অন্যের সঙ্গে মিশতে না চাওয়া, নাম ধরে ডাকলে সাড়া না দেওয়া, অন্যের বলা কথা বারবার বলা, একই কাজ বারবার করা, নিজের শরীরে নিজে আঘাত করা, নিজস্ব রুটিন মেনে চলা, শব্দ বা আলোর প্রতি অস্বাভাবিক সংবেদনশীলতা, হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে ওঠা ইত্যাদি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তায় ২০০৯ সালে পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, কেবল ঢাকা বিভাগে প্রতি হাজারে আটজন শিশুর মধ্যে অটিজম রয়েছে। অটিজম নিয়ে বিভ্রান্তি আছে পৃথিবীর সর্বত্রই। অটিজম আছে এমন শিশুদের প্রতি রয়েছে বৈষম্য। এ জন্যই ২ এপ্রিল সারা পৃথিবীতে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস পালন করা হয়। গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশেও এই দিবস পালন করা হয়েছে। বাংলাদেশে অটিজম নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম শুরু হয়েছে কয়েক বছর হলো। ঢাকায় ‘অটিজম রিসোর্স সেন্টার’, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সেন্টার ফর নিউরোডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড অটিজম ইন চিলড্রেন’ এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে ‘চাইল্ড গাইডেন্স ক্লিনিক’-এ অটিজমের বিষয়ে বিশেষ পরামর্শ ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজ, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, অনুমোদিত বিশেষায়িত স্কুলেও অটিজমের পরিচর্যার বিষয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক পরামর্শ দেওয়া হয়।
অটিজম আছে এমন শিশুর জন্য সার্বিক পরিচর্যার জন্য প্রয়োজন বায়ো-সাইকো সোশ্যাল প্রক্রিয়ায় শিশুটির পরিচর্যা করা। এই প্রক্রিয়ায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, শিশু মনোবিশ্লেষক, সমাজকর্মী, স্পিচ ও অকুপেশনাল থেরাপিস্ট—সবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। অটিজম আছে এমন শিশু যখন অস্বাভাবিক আচরণ করে, যেমন-নিজের হাত নিজে কামড়ানো, নিজেকে আঘাত করা, খিঁচুনি, অতি চঞ্চলতা বা অমনোযোগিতা দেখা যায়, তখন তাকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অবশ্যই ওষুধ সেবন করাতে হবে। আবার যখন তার অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের পরিবর্তন করা প্রয়োজন, তখন অ্যাপ্লায়েড বিহেভিয়ার অ্যানালাইসিসসহ বিভিন্ন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়, ভাষার ব্যবহার শেখার জন্য প্রয়োজন স্পিচ থেরাপিস্ট, কাজ শেখানোর জন্য দরকার অকুপেশনাল থেরাপিস্ট। আবার সামাজিক সহায়তার জন্য সমাজকর্মীদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। মূলধারার স্কুলশিক্ষকদেরও দরকার এ বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ। এই সব কটি ক্ষেত্রে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের মধ্যে দরকার পারস্পরিক বোঝাপড়া আর সমন্বয়। তা না হলে যিনি ওষুধ দেবেন, তিনি হয়তো আচরণ পরিবর্তনের দিকে তেমন নজর দিলেন না, আবার যিনি আচরণ পরিবর্তন নিয়ে কাজ করেন, তিনি ওষুধের বিষয়ে দৃকপাত না করায় দেখা যায় শিশুটির খিঁচুনি হচ্ছে, কিন্তু মা-বাবা ওষুধ খাওয়াচ্ছেন না। অনেকে আবার মনে করেন, অটিজম আছে এমন শিশুদের কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। এই বিভ্রান্তিগুলো থেকে মুক্ত থাকার জন্য প্রয়োজন অটিজমের চিকিৎসা ও পরিচর্যার বিষয়ে একটি জাতীয় নীতিমালা বা ন্যাশনাল গাইডলাইন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক প্রকাশিত ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব ডিজিজেস (আইসিডি ১০) এবং আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের বিভিন্ন রোগ শনাক্তকরণের পদ্ধতিতে (ডিএসএম ৪) এ অটিজমকে একটি ব্যাপক বিকাশজনিত সমস্যা হিসেবে সুনির্দিষ্টভাবে শ্রেণীভুক্ত করা হয়েছে। এই দুই সংস্থা এবং অটিজমবিষয়ক বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান অটিজম স্পিকস তাদের বিভিন্ন প্রকাশনায় অটিজমের শনাক্তকরণ ও চিকিৎসাপদ্ধতির বিষয়ে যে দিকনির্দেশনা দিয়েছে, আমরা সেগুলো অনুসরণ করতে পারি।
অটিজমের সঙ্গে প্রায়ই যে সমস্যাগুলো দেখা যেতে পারে, তা হলো—অতি চঞ্চলতা ও অমনোযোগিতা, হঠাৎ অতিমাত্রায় রাগ করা, খিঁচুনি, বুদ্ধি প্রতিবন্ধিতা, নিজেকে আঘাত করা, ঘুমের সমস্যা, খাদ্যাভ্যাসজনিত সমস্যা ইত্যাদি। এই সমস্যাগুলো বাদ দিয়ে অটিজমের চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে বাবা-মা এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
অটিজমের পরিচর্যায় মা-বাবাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে—তাঁরা কীভাবে শিশুটির যত্ন করবেন, তার সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করবেন ইত্যাদি। অনেক সময় বাবা-মায়েরা শিশুর অটিজমের জন্য নিজেদের দায়ী করেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে, অটিজমের জন্য কোনোভাবেই বাবা-মা দায়ী নন। অযথা ধৈর্যহারা না হয়ে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত চিকিৎসাপদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। শিশুটির সক্ষমতার দিকে লক্ষ রেখে প্রথমে তাকে মূলধারার স্কুলে অন্য সব শিশুর সঙ্গে শিক্ষা প্রদান করতে হবে এবং প্রয়োজনে বিশেষ সহায়তা দিতে হবে। যেসব শিশু মূলধারা মানিয়ে নিতে একেবারেই সক্ষম নয়, তাদের বিশেষায়িত স্কুলে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। যারা একেবারেই বাইরের কোনো স্কুলে যেতে পারছে না, তাদের জন্য বাড়িতে উপযোগী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সঙ্গে নিতে হবে মানসিক প্রস্তুতি। অটিজমের নির্ণয় ও চিকিৎসাসেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, সাইকোলজিস্ট, স্পিচ থেরাপিস্ট, সমাজকর্মী, বিশেষায়িত স্কুলের প্রশিক্ষকদের মনে রাখতে হবে, একটি শিশুর অটিজমের চিকিৎসা কেবল তাদের কারও একার পক্ষে করা সম্ভব নয়, সংশ্লিষ্ট সবার নিজ নিজ অবস্থান থেকে যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে। অপরের ভূমিকার সমালোচনা করা নয়, বরং যে শিশুটির অটিজম আছে, তাকে মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাই হোক সবার অভিন্ন লক্ষ্য।
আহমেদ হেলাল
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, এপ্রিল ০৪, ২০১২

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

“প্রযুক্তিকে ভালবাসুন, প্রযুক্তির সাথে থাকুন সবসময়, প্রযুক্তির আলো ছড়িয়ে দিন বিশ্বময়”

join fb

Join Me On Facebook
^ Back to Top